বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি শুরুতে ছিলেন এই মামলার প্রধান সাক্ষী, কিন্তু পরবর্তীতে পুলিশের তদন্তের পর মামলার চার্জশিটে মিন্নির নাম যুক্ত করা হয় অভিযুক্তের তালিকায়। আর এই প্রধান সাক্ষী এখন মৃত্যুদণ্ড পাপ্ত আসামী।
গত বছরের ১৭ই জুলাই আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি প্রায় দেড় মাস জেলে ছিলেন। পরে তিনি হাইকোর্টের আদেশে শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তি পান। গতকাল (রায় ঘোষণার দিন) সকালেই মিন্নি বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়েছিলেন তার বাবার সাথে, মোটরসাইকেলে করে । রায় ঘোষিত হওয়ার পর তাকে আদালত থেকে কড়া পুলিশী পাহারায় কারাগারে নেয়া হয়।
মিন্নি ছাড়াও এই মামলায় আরো পাঁচ আসামীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
মামলায় সরকারি আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর ভুবন চন্দ্র হাওলাদার জানিয়েছেন, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি তার স্বামীকে হত্যার ‘ষড়যন্ত্র’ এবং ‘পরিকল্পনায়’ যুক্ত ছিলেন, সেটা প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, মিন্নি ছিলেন ঘটনার মুল পরিকল্পনাকারী – এটি আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন।
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আইনজীবী মাহবুব বারী আসলাম বলেছেন, “মিন্নির মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ব্যাপারে আদালত বলেছে, হত্যার ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলে যখন তার স্বামী রিফাত শরীফ উঠছিল, তখন মিন্নি মোটরসাইকেলে না উঠে পিছনের দিকে যায়। সে সময় রিফাত শরীফ তার পিছনে পিছনে দৌড়ে যায়।”
“এর পরবর্তীতে অন্য আসামীরা রিফাত শরীফকে ধরে নিয়ে আসে টানাহেঁচড়া করতে করতে। তখন মিন্নি স্বাভাবিকভাবে হাঁটতেছিল। এরপরে ঘটনা ঘটে।” হামলার মুখে তার স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি – যা ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল এবং তা তখন ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু সে বিষয়টি কতটা বিবেচনা করা হয়েছে, তা নিয়ে তার সন্দেহ রয়েছে।
এই মামলার প্রধান আসামী ছিলেন সাব্বির আহমেদ নয়ন, যিনি নয়ন বণ্ড নামে পরিচিত। পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনি নিহত হয়েছেন।
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তার মেয়ে এই মামলায় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি এবং হাইকোর্টে আপিল করবেন।
তবে সরকারি আইনজীবী ভুবন চন্দ্র হাওলাদার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, মামলার তদন্তসহ সব প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে হয়েছে।