আলাদা-আলাদা করে বিএনপির ৩১ দফা প্রকাশ

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং যুগপৎভাবে আন্দোলনে শরিক দল ও জোটের পক্ষ থেকে ঘোষিত ‘৩১ দফা’ লিফলেট-বই ছাড়াও প্রতিটি ‘দফা’ সর্বসাধরণের সুবিধার জন্য আলাদা-আলাদা করে প্রকাশ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দফাগুলো আলাদাভাবে প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। যেখানে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রথম প্রস্তাবেই বলা হয়েছে, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠনের কথা।

এছাড়া আলাদাভাবে প্রকাশ করা বিভিন্ন দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময়সীমা নির্ধারণ, সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের কথা হয়।

পাঠকদের সুবিধার্থে আলাদাভাবে প্রকাশ করা ৩১ দফা নিম্নে তুলে ধরা হলো

দফা ১ – জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন।

দফা ২ – সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্রসত্ত্বা ও জাতীয় সমন্বয় কমিশন গঠন।

দফা ৩ – অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন।

দফা ৪ – আইনসভা, মন্ত্রীসভা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিচার বিভাগের মাঝে সমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা।

দফা ৫ – প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময়সীমা অনূর্ধ্ব পরপর দুই মেয়াদ নির্ধারণ।

দফা ৬ – বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আইন সভায় উচ্চকক্ষের প্রবর্তন।

দফা ৭ – সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন।

দফা ৮ – নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধন।

দফা ৯ – স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে সকল রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন ও শক্তিশালীকরণ।

দফা ১০ – বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য জুডিশিয়াল কমিশন গঠন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃপ্রবর্তন ও সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ আইন প্রণয়ন।

দফা ১১ – গণমুখী ও জনকল্যাণমূলক প্রশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন গঠন।

দফা ১২ – মিডিয়া কমিশন গঠন করে তথ্য ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।

দফা ১৩ – দুর্নীতি প্রতিরোধে দৃশ্যমান কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায়পাল নিয়োগ।

দফা ১৪ – সর্বস্তরে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা।

দফা ১৫ – আত্মনির্ভরশীল জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন।

দফা ১৬ – ধর্মীয় স্বাধীনতার সর্বোচ্চ ও কার্যকর নিশ্চয়তা প্রদান।

দফা ১৭ – মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা।

দফা ১৮ – প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং নবায়নযোগ্য ও মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাত আধুনিকায়ন।

দফা ১৯ – জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন।

দফা ২০ – প্রতিরক্ষা বাহিনীর অধিকতর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা।

দফা ২১ – প্রশাসন ও সেবা বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো স্বশাসিত ও ক্ষমতাবান করা।

দফা ২২ – শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান।

দফা ২৩ – কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও বেকার ভাতা প্রবর্তন।

দফা ২৪ – নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।

দফা ২৫ – চাহিদা ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা।

দফা ২৬ – ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এবং ‘সার্বজনীন চিকিৎসা’ ব্যবস্থা কার্যকর করা। প্রাথমিক ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রশিক্ষিত নারী ও পুরুষ পল্লী স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা করা এবং সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা সুবিধা নিশ্চিত করা।

দফা ২৭ – কৃষকের উৎপাদন ও বিপণন সুরক্ষা দিয়ে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।

দফা ২৮ – সড়ক, রেল, নৌপথের আধুনিকায়ন ও বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।

দফা ২৯ – জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ এবং নদীশাসন ও খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা।

দফা ৩০ – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা এবং আণবিক শক্তির উন্নয়ন ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা।

দফা ৩১ – যুগোপযোগী, পরিকল্পিত, পরিবেশবান্ধব আবাসন এবং নগরায়ণ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।